ডিটেকটিভ স্পোর্টস ডেস্ক
এর আগে ১০টি টি-টোয়েন্টি খেলেছিলেন। ব্যাটিংয়ের সুযোগ পেয়েছিলেন ৫ বার। সর্বোচ্চ রান ছিল ৯। সেই জাকির হোসেন এবারের বিপিএলে প্রথম খেলতে নেমেই তুললেন ঝড়। সঙ্গে দারুণ ব্যাট করলেন মুমিনুল হক ও মুশফিকুর রহিম। ছোটখাটো গড়নের তিন ব্যাটসম্যানের সৌজন্যে রাজশাহী কিংস পেল বড় জয়।
বিপিএলে সিলেট সিক্সার্সকে ৭ উইকেটে হারিয়েছে রাজশাহী কিংস। পঞ্চম ম্যাচে পেয়েছে দ্বিতীয় জয়।
মিরপুরে শুক্রবার সিলেটের ১৪৬ রান রাজশাহী পেরিয়ে যায় ১৫ বল বাকি থাকতে। সিলেটের এটি ষষ্ঠ ম্যাচে তৃতীয় পরাজয়।
বয়সভিত্তিক ক্রিকেটে আলো ছড়ানোর পর সম্প্রতি হাই পারফরম্যান্স দল ও বাংলাদেশ ‘এ’দলে খেলে আসা জাকির খেলেছেন দুর্দান্ত। প্রথম টি-টোয়েন্টি ফিফটিতে অপরাজিত ছিলেন ২৬ বলে ৫১ রান করে।
রান তাড়ায় উদ্বোধনী জুটিতেই প্রায় অর্ধেক পথ পেরিয়ে যায় রাজশাহী। ইনিংসের দ্বিতীয় বলেই নাসিরের বলে রনি তালুকদারের ক্যাচ ছাড়েন গুনাথিলাকা, সেটির খেসারত দিতে হয় দলকে। ৮.৩ ওভারে ৬৫ রানের জুটি গড়েন মুমিনুল ও রনি।
রান স্রোতের শুরু মুমিনুলের ব্যাটে। দারুণ সব শটে পথম ৪ ওভারে ১৬ বলে করেন ২৫ রান। পরে সঙ্গত ধরেন রনি। সপ্তম ওভারে রান পেরিয়ে যায় পঞ্চাশ।
জুটি ভাঙে রনির বিদায়ে। ২২ বলে ২৪ করে স্টাম্পড হন নাসিরকে বেরিয়ে এসে খেলতে গিয়ে।
দলে ফেরা সামিত প্যাটেল তিনে নেমে আউট হয়েছেন বাজে শটে। তবে চাপে পড়তে হয়নি রাজশাহীকে। মুমিনুল তো ছিলেনই, উইকেটে গিয়েই দারুণ সব শট খেলতে থাকেন জাকির।
জাকির অবশ্য আউট হতে পারতেন ১৬ রানেই। নাবিল সামাদকে দারুণ একটি চার মারার পরের বলেই ক্যাচ দিয়েছিলেন মিড উইকেটে। কিন্তু তৃতীয় আম্পায়ার দেখতে পান, বলটি ছিল নো বল। জাকির নতুন জীবন উদযাপন করেন পরের দুই বলেই বিশাল দুটি ছক্কা মেরে।
মুমিনুল বড় করতে পারেননি সম্ভাবনাময় ইনিংসটিকে। আবুল হাসানের প্রথম বলেই উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়েছেন ৩৬ বলে ৪২ রান করে।
বাকি পথটুকু পাড়ি দিতে খুব একটা বেগ পেতে হয়নি জাকির ও মুশফিকুর রহিমকে। তাইজুলকে টানা দুই চারে ম্যাচশেষ করেছেন জাকির। ৪ চার ও ৩ ছক্কায় অপরাজিত ছিলেন ৫১ রানে। ২০ বলে ২৫ রানে অপরাজিত মুশফিক। দুজনের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে ৩২ বলে এসেছে ৫৩ রান।
সিলেটের শুরুটাই ছিল বাজে। চোট কাটিয়ে ফেরা আন্দ্রে ফ্লেচারকে ম্যাচের প্রথম ওভারেই ফিরিয়ে দেন মোহাম্মদ সামি।
সামিকেই পরে এক ওভারে চার-ছক্কা মারেন উপুল থারাঙ্গা ও দানুশকা গুনাথিলাকা। কিন্তু অসাধারণ এক ডেলিভারিতে থারাঙ্গাকে বোল্ড করে দেন মেহেদি হাসান মিরাজ।
চারে ব্যাট করার সুযোগ পেয়ে কাজে লাগাতে পারেননি নুরুল হাসান সোহান। জীবন পেয়েও অধিনায়ক নাসির হোসেন ব্যর্থ আরও একবার।
সিলেটের ভরসা হয়ে ছিলেন গুনাথিলাকা। নাসিরের মত জীবন পেয়েছেন তিনিও। কিন্তু বড় করতে পারেননি ইনিংস। ফেরেন ৩৭ বলে ৪০ রান করে।
১৭ ওভার শেষে সিলেটের রান ছিল ৯২। রান খরায় থাকা সাব্বিরকে ব্যাটিং অর্ডার বদলে নামানো হয় ছয়ে। তখনও পর্যন্ত খেলছিলেন ধীরে-সুস্থে। রান ছিল তার ১৭ বলে ১১। শেষ ৩ ওভারে চালান তা-ব।
শুরুটা টিম ব্রেসনানের হাতে। ফরহাদ রেজাকে ওড়ান লং অনের ওপর দিয়ে। ওই ওভারেই দুটি বিশাল ছক্কা, একটি চার মারেন সাব্বির।
উনিশতম ওভারে সামিকে টানা দুই চার মারেন ব্রেসনান। শেষ ওভারে কেসরিক উইলিয়ামসকে টানা দুই ছক্কায় ওড়ান সাব্বির। পরের বলে আউট হন ২৫ বলে ৪১ রান করে।
ব্রেসনান অপরাজিত থাকেন ১৭ বলে ২৯ করে। শেষ ৩ ওভারে সিলেট তোলে ৫৪ রান।
ব্যাটিং উইকেটে সেই রান ছিল না যথেষ্ট। সিলেটের বোলাররা পারেনি দারুণ কিছু করতে। মুমিনুল-জাকিররা রাজশাহীকে জিতিয়েছেন অনায়াসেই।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
সিলেট সিক্সার্স: ২০ ওভারে ১৪৬/৬ (থারাঙ্গা ১০, ফ্লেচার ০, গুনাথিলাকা ৪০, নুরুল ১০, নাসির ৯, সাব্বির ৪১, ব্রেসনান ২৯*, প্লাঙ্কেট ৬*; সামি ১/৩৬, মিরাজ ১/১২, উইলিয়ামস ২/৩২, ফরহাদ ০/৪৩, ফ্রাঙ্কলিন ১/১৭, সামিত ১/৬)।
রাজশাহী কিংস: ১৭.৩ ওভারে ১৫০/৩ (মুমিনুল ৪২, রনি ২৪, সামিত ১, জাকির ৫১*, মুশফিক ২৫*; নাসির ১/২০, ব্রেসনান ০/২৪, প্লাঙ্কেট ০/২৯, তাইজুল ০/৩২, নাবিল ১/২৭, আবুল হাসান ১/১৭)
ফল: রাজশাহী কিংস ৭ উইকেটে জয়ী